নতুন সময়২৪.কম | আপডেট: 1:37 PM, October 15, 2024
স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা পরিচয় দীর্ঘদিন ধরে নিউমার্কেটের চাঁদা তুলছেন টুন্ডা শফিক!!
নিজস্ব প্রতিবেদক: নিউ মার্কেট থানা আওয়ামী লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি হেমায়েত হোসেন চুন্নুর সহযোগী টুন্ডা শফিকের নেতৃত্বে নিউমার্কেট এলাকায় চাঁদাবাজির রমরমা ব্যবসা।
টুন্ডা শফিক আগে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পরিচয়ে নিউমার্কেটের চাঁদা তুলতেন এখন তিনি ওই এলাকার বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ফুটপাতের ব্যবসায়ী রায়হান, জসিম, শাওন, রহমানসহ বেশ কয়েকজন জানান, বিএনপির এই নামধারী নেতার নামের থানায় কয়েকটা অভিযোগ রয়েছে। তবে থানা পুলিশ এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
থানা পুলিশের সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের নিউমার্কেট থানার নেতা শরীয়তপুরে চুন্নুর ছত্রছায়ায় থেকেই ১৬ বছর ধরে নিউমার্কেটের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে শফিক।
সূত্র জানায়, শফিক ও চুন্নুর গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরে। শরীয়তপুর সেই সূত্র ধরে চুন্নুকে, শফিক চাচা বলেন। চাচা ভাতিজা মিলে চাঁদাবাজি ধরে রাখতে শফিক কখনো আওয়ামী লীগ, কখনো বিএনপির সংগঠনের যুক্ত থাকে। মূলত তিনি নিউমার্কেটের চাঁদা আদায় ধরে রাখতে এসব করে থাকেন।
আ.লীগ সরকার পতনের পর আগে টুন্ডা শফিক কয়েকজনকে দিয়ে নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাত থেকে চাঁদা তুলতেন। ওই সময় তিনি নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে ফুটপাতের চাঁদা নিয়ন্ত্রণ করতেন।
নিউ মার্কেট এলাকায় সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টুন্ডা শফিকের সঙ্গে আরো জড়িত রয়েছেন- ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, ইভো হোসেন ইভু, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব সরকার ও ঠাকুর সহ আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটের অনেক সদস্য প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এই চাঁদাবাজির সাথে জড়িত। তবে এ সমস্ত নেতাকর্মীরাও অদৃশ্য থেকে টুন্ডা শফিকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে নিউমার্কেটের চাঁদাবাজ নিয়ন্ত্রণ করছে। এখনো আওয়ামী লীগ নেতার সমর্থনকৃত লাইন ম্যানরা এসব দাদার টাকা তোলেন।
সরেজমিনে দেখা যায়- আওয়ামী লীগের এক অদৃশ্য নেতা নিউ মার্কেটের চলাচল করা ফুটপাত দখল করে সিটি কর্পোরেশনের নামে চারটি দোকান তুলেছেন। সে দোকান তিনি অদৃশ্যের মত নিয়ন্ত্রণ করেন। এসব কাজের শফিক চক্র সহযোগিতা করে।
জানা যায়, ৫ আগস্টের পর চাঁদার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মোস্তফা নামের এক বিএনপির নেতার সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সমর্থিত নেতা টুন্ডা শফিকের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। এবং এই সমস্যা কাওরান বাজারের একটি মদের বারে আড্ডার মাধ্যমে সমাধান করা হয়।
বিএনপির এই নামধারী নেতার নামে সংশ্লিষ্ট থানায় চাঁদাবাজি সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, শফিক গাউছিয়া ওভারব্রিজ থেকে শুরু করে প্লেন মসজিদ চাঁদনী চকের এবং ব্রিজের নিচের ফাঁকা মাঠের দোকানপাট থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলেন।
এবং নিজেই নতুন করে আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত ২০- ২৫ টা দোকান ফুটপাতে বসিয়েছেন। প্রতিটা দোকান থেকে অ্যাডভেঞ্চারে নামে ১৫-২০ থেকে মতো টাকা নেন।
নিউমার্কেট থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ছাত্র খালেকের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন শফিক। এবং সাংগঠনিক সম্পাদক স্বেচ্ছাসেবক লীগের নিউ মার্কেটের রিপনের সঙ্গে সে সম্পর্ক রেখে দীর্ঘদিন যাবত এসব চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
নিউ মার্কেট একাধিক ব্যবসায়ী সূত্র জানায়, প্রতিমাসে প্রায় ৫-১০ লক্ষ টাকার বেশি ফুটপাত থেকে চাঁদা তোলেন শফিক।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে টুন্ডা শফিক সাংবাদিক পরিচয় দিলে ফোনটি কেটে দেন। এবং পরবর্তীতে তার এক বিশ্বস্ত ব্যক্তির মাধ্যমে জানান, আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। এবং আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ সব মিথ্যা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে নিউমার্কেট থানার ওসি বলেন, যদি কেউ চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। তাছাড়া এর সঙ্গে আমাদের কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা রয়েছে।
নতুন সময়/আইভি