নতুন সময়২৪.কম | আপডেট: 3:37 PM, November 11, 2024
অবৈধ পথে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক উত্তরা বিআরটিএ রাজস্ব কর্মকর্তা সুনিল চন্দ্র দাস

নিজস্ব সংবাদদাতা: অবৈধ পথে অটেল সম্পদের মালিক হয়েছেন উত্তরা বিআরটিএ রাজস্ব কর্মকর্তা সুনিল চন্দ্র দাস। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে সত্যতা ও পাওয়া গেছে। অবশ্য সুনীল চন্দ্র দাসের অভিযোগ তিনি এসব সম্পদ বৈধ পথে করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে যেসব দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা মিথ্যা বলে জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুনিল চন্দ্র দাস বলেন, আমার কোন সম্পত্তি নেই। এসব অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। আমার স্ত্রীর নামে একটি ফ্লাট রয়েছে ডেমরায় তাও পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে কেনা। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগে।
আপনি দালাল নিয়োগ দিয়ে বিআরটিএ সকল কাজ করেন এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন দালাল নেই। আর আমি কাউকে সহযোগিতা করি না।
এ বিষয়ে বিআরটিএর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন,, সম্পত্তি তার ব্যক্তিগত। তবে কেউ কর্ম ক্ষেত্রে অপরাধ করলে তার বিচার হবে এবং তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বিআরটিএ’র দুর্নীতি ও অনিয়মের কাজে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তথ্য মতে জানা যায়, বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো সার্কেল -৩, দিয়াবাড়ি উত্তরায় সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত সুনিল চন্দ্র দাস। তিনি অবৈধ ঘুষ বানিজ্য, দালাল নিয়োগ করে প্রতিদিন অসংখ্য টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এসব সম্পদ তিনি নামে বেনামী রেখেছেন সেই সঙ্গে এসব সম্পদের অধিকাংশই তার স্ত্রী চন্দনা দাসের নামে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সুনিল চন্দ্র দাস বিআরটি এ দালাল নিয়োগ করে দালালের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত গাড়ি ফিটনেস সহ যাবতীয় কাজ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে। এছাড়া তিনি নিজেকে পিএইচডি ডিগ্রি ধারী একজন ব্যক্তি একথা অফিসে কর্মকর্তা ও কর্মচারী সহ অনেকে কাছে বলে নিজের দাম বাড়াতে থাকেন। বিআরটিএ সকলের মুখে মুখে তার এই পিএইচডি ডিগ্রি নারী নামটা শোনা যায়। অনেকেই তাকে পিএইচডি সুনীল ও ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ সুনীল হিসেবে চেনেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানায়, সুনীলের চাকরি শুরুতে তেমন কিছু ছিল না হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলিয়ে কলা গাছ হয়ে যান। অবৈধ পথে গড়ে তোলেন লক্ষ লক্ষ টাকা। তিনি এলাকার কাউকে পরোয়ার করে না। তার অফিস চলাকালীন শেষেও তদবির বাণিজ্যে লিপ্ত থাকেন এমন অসংখ্য অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। সুনীল চন্দ্র দাস তার অফিসের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তাদেরকে ম্যানেজ করে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার অপকর্মের কেউ প্রতিবাদ করছেন না।
তথ্য মতে জানা যায়, সুনীলের পিতার নাম মৃত রামেস চন্দ্র দাস,মাতা নামাহড়ি প্রিয়া রানী দাস। স্ত্রী চন্দনা দাস। সুনিল চন্দ্র দাস এর টিন নং৫৭৫৬১২৪৫৮৪৪৭,কর সার্কেল-৮৫, কর অঞ্চল -০৪ ঢাকা। সুনিল চন্দ্র দাস বর্তমানে ৩৯০/২/১,পশ্চিম রামপুরার বাসায় বসবাস করেন।
সম্প্রতি এক অনুসন্ধানে জানা যায়, বাড়ি নং ৪৫, মধুপুরী রুপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ। এই বাড়িটিও সুনিল চন্দ্র দাসের। তার স্ত্রী চন্দনা দাস টিন নং ২৫৮০৭৫৭৭২৪৯৯।সুনিল চন্দ্র দাস তার স্ত্রী চন্দনা দাসের নামে বিলাস বহুল আলিশান একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন ঢাকার ডেমরার,
কোনাপাড়াতে। সুনীল চন্দ্র দাস ২৪ পরগণায় ঘুষের টাকা দিয়ে দুইটি বাড়ি ক্রয় করেছেন।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, সুনীল আওয়ামী ফ্যাসিবাদীর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম।তার প্রভাবে বিআরটিএ প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তারা অনেক হয়রানির শিকার হয়েছে বলেও অভিযোগ আছে।
সূত্রমতে, সুনীলের উল্লেখযোগ্য বাড়ি ও সম্পত্তি রয়েছে, বাসা ২৭ রোড ০৫, ধানমন্ডি আবাসিক এরিয়া, ঢাকা। ফ্ল্যাটের বর্তমান বাজার মূল্য তিন কোটি ২০ লক্ষ টাকা। এছাড়া প্লট নং- ১১ রোড -৪১১, সেক্টর ১০, পূর্বাচল আবাসিক এরিয়া ঢাকা। উক্ত প্লটটি তার স্ত্রী কে ০২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রায় করে দেন। বাসা নং ১৫ রোড নং০ ৩ সেক্টর ১৫ উত্তরা ঢাকা ১২৩০, চার কোটি টাকা দিয়ে ক্রায় করেন। বাসা নং ৭৭ রোড ০৫ বসিলা মোহাম্মদপুর,ঢাকা – ১২০৭। উক্ত বাড়িটি ১০ কাঠা জমির উপরে সপ্তম তালা ভবন নির্মাণ করেছেন কোটি টাকা ব্যয় করে। প্লট নং ৯/২ রোড নং ০৭, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। এই বাড়িটির চতুর্থ তলায় ২৮০০ স্কয়ার বর্গফুটের ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন ২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা মূল্যে। সাভারের মধুমতি আবাসিক সিটির উল্টা দিকে ২০ বিঘা সম্পত্তি ক্রয় করে শত কোটি টাকা ব্যয় করেন। এছাড়া নামের বেনামে তার কোটি কোটি টাকা সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সুনীলের অবৈধ সম্পত্তির উৎস কি ঘুষ দুর্নীতি জনগণকে ঠকানো? নাকি আওয়ামী ফ্যাসিস্টের উত্তরসূরী। এমন নানান বিষয়ে সড়ক জনপদ ও মহাসড়কে বিভাগে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুটো একটি অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, তার বিরুদ্ধে সার্বিক বিষয়ে যে সব অভিযোগ এসেছে সেগুলো আমলে নিয়ে আমরা তদন্ত করব।

